বিড়ালের ডায়রিয়া: কখন চিন্তিত হবেন এবং প্রাথমিকভাবে কী করবেন?

আপনার আদরের বিড়ালটির ডায়রিয়া হলে আপনি চিন্তিত হয়ে পরেন। এটি একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, অনেক সময় এটি গুরুতর কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে। ডায়রিয়া হলে বিড়াল পানিশূন্যতায় ভুগতে পারে, যা তার জন্য বিপদ ডেকে আনে। তাই কখন এই সমস্যাকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং প্রাথমিকভাবে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তা জানা খুবই জরুরি।

বিড়ালের ডায়রিয়া কেন হয়?

ডায়রিয়ার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। এগুলো জানা থাকলে আপনি সহজেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবেন। কিছু প্রধান কারণ নিচে দেওয়া হলো:

  • খাদ্যাভ্যাসে হঠাৎ পরিবর্তন: নতুন কোনো খাবার দিলে বা হঠাৎ করে খাবারের ব্র্যান্ড বদলে দিলে বিড়ালের পেটে সমস্যা হতে পারে।
  • খাবারে অ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতা: কিছু বিড়ালের নির্দিষ্ট খাবারে অ্যালার্জি থাকে, যা ডায়রিয়া ডেকে আনতে পারে।
  • পরজীবী: কৃমি বা প্রোটোজোয়ার মতো অভ্যন্তরীণ পরজীবী ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ।
  • ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ: ফেলি‌ন প্যানলিউকোপেনিয়া (Feline Panleukopenia) বা সালমোনেলার (Salmonella) মতো সংক্রমণ থেকে ডায়রিয়া হতে পারে।
  • বিষাক্ত কিছু খেয়ে ফেলা: বিড়াল যদি কোনো বিষাক্ত গাছ, রাসায়নিক দ্রব্য বা বিষাক্ত খাবার খেয়ে ফেলে, তাহলে ডায়রিয়া হতে পারে।
  • অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা: কিডনি বা লিভারের রোগ, অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ (Pancreatitis) বা প্রদাহজনক পেটের রোগ (IBD)-এর মতো গুরুতর স্বাস্থ্যগত কারণেও ডায়রিয়া হতে পারে।

বিড়ালের ডায়রিয়ায় কখন চিন্তিত হবেন?

বিড়ালের ডায়রিয়া হলে সব সময়ই যে ভেটেরিনারি চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে, এমনটা নয়। তবে কিছু লক্ষণ দেখা গেলে তা গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এই লক্ষণগুলো দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে:

  • ডায়রিয়া যদি ২৪-৪৮ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয়।
  • বিড়ালের বমি, ক্লান্তি বা জ্বর থাকে।
  • বিড়ালের পায়খানার সাথে রক্ত গেলে বা পায়খানা কালচে রঙের হলে।
  • বিড়ালের প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে বা সে অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
  • বিড়ালছানার (Kitten) ডায়রিয়া হলে, কারণ তাদের পানিশূন্যতা দ্রুত হয়।

বিড়ালের ডায়রিয়া হলে প্রাথমিকভাবে যা করণীয়

যদি আপনার বিড়ালের ডায়রিয়া উপরে উল্লেখিত গুরুতর লক্ষণের মধ্যে না পড়ে, তাহলে আপনি বাড়িতে বসে কিছু প্রাথমিক ব্যবস্থা নিতে পারেন। তবে যেকোনো অবস্থাতেই আপনার পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

১. খাবার নিয়ন্ত্রণ

প্রথম ২৪ ঘণ্টা বিড়ালকে কোনো শক্ত খাবার দেবেন না। এতে তার পরিপাকতন্ত্র কিছুটা বিশ্রাম পাবে। তবে পানি সবসময় হাতের কাছে রাখুন, যাতে সে পানিশূন্যতায় না ভোগে। ২৪ ঘণ্টা পর যদি ডায়রিয়া কিছুটা কমে আসে, তাহলে অল্প পরিমাণে সেদ্ধ মুরগির মাংস (হাড় ছাড়া) বা সেদ্ধ ভাত দিতে পারেন। এটি সহজপাচ্য এবং তার পাকস্থলীর জন্য সহায়ক।

২. প্রচুর পানি পান করানো

ডায়রিয়ার প্রধান ঝুঁকি হলো পানিশূন্যতা। তাই আপনার বিড়ালকে প্রচুর পানি পান করাতে হবে। আপনি চাইলে সামান্য চিনি এবং লবণ মিশিয়ে একটি ইলেকট্রোলাইট দ্রবণ তৈরি করে তাকে খাওয়াতে পারেন। অথবা, মিউ মিউ শপ বিডি থেকে ক্যাটস ওয়াটার ডিসপেনসার কিনে নিতে পারেন, যা আপনার বিড়ালকে বেশি পানি পানে উৎসাহিত করবে।

৩. লিটার বক্সের দিকে নজর রাখুন

ডায়রিয়া হলে বিড়াল ঘন ঘন লিটার বক্সে যায়। তাই লিটার বক্সটি নিয়মিত পরিষ্কার রাখা খুব জরুরি। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি কমে। আমাদের ওয়েবসাইটে আপনি বিভিন্ন ধরনের বিড়ালের লিটার খুঁজে পাবেন, যা দুর্গন্ধ কমিয়ে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৪. প্রোবায়োটিক ব্যবহার

পাকস্থলীর ভালো ব্যাকটেরিয়া ভারসাম্যহীন হয়ে গেলে ডায়রিয়া হতে পারে। তাই আপনার পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আপনি বিড়ালকে প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট দিতে পারেন। এটি হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করবে।

৫. নতুন খাবার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন

ডায়রিয়া চলাকালীন সময়ে বা সুস্থ হওয়ার কিছুদিন পর্যন্ত বিড়ালকে নতুন কোনো খাবার দেবেন না। স্বাভাবিক খাবারেই তাকে রাখুন। যদি আপনি কোনো নতুন খাবার দিয়ে থাকেন, তবে তা বন্ধ করে আগের খাবারে ফিরে যান।

বিড়ালের ডায়রিয়া প্রতিরোধে যা করতে পারেন

ডায়রিয়া যাতে না হয়, তার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে:

  • নিয়মিত ডিওয়ার্মিং করান: পরজীবী থেকে সুরক্ষার জন্য পশুচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ান। মিউ মিউ শপ বিডি তে আপনি আপনার বিড়ালের জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পণ্য খুঁজে পাবেন।
  • উচ্চ মানের খাবার দিন: আপনার বিড়ালকে সব সময় উচ্চ মানের ক্যাট ফুড দিন।
  • বিষাক্ত বস্তু থেকে দূরে রাখুন: বাড়ির আশেপাশে বিষাক্ত গাছপালা, রাসায়নিক বা অন্যান্য ক্ষতিকর জিনিস সরিয়ে ফেলুন।

মনে রাখবেন, আপনার বিড়ালের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকলে বা অবস্থার উন্নতি না হলে দ্রুত একজন পশুচিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।

Comments

Leave a Comment